রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৩ | রমজান ২০২৩

২০২৩ সালের রমজান মাসের ক্যালেন্ডার | রমজান ২০২৩ কত তারিখে ,রোজার সময়সূচি ২০২৩, পবিত্র রমজান মাস ২২ এপ্রিলে হবে

২০২৩ সালের রমজান মাসের ক্যালেন্ডার তারিখ সহ - এক বছর পর আবার, রমজান আমাদের কাছে রহমত ও নাজাতের আহ্বান নিয়ে এসেছে। রমজানের খবর শুনলেই আমাদের সকলের মন ভরে যায়। রমজানের কিছু গজল শুনেও রমজানের কৌতূহল জাগে। পবিত্র রমজান মাসে মুসলমানদের পবিত্র দিন ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়।

রমজানের রোজা পালন সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা  পবিত্র কুরআন এ বলেছেন, 

“হে মুমিন সকল! তোমাদের উপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপরও ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার । ” (সূরা বাকারা-১৮৩)

প্রায় এক মাস রোজা রাখার পরের দিন পালিত হয় ঈদুল ফিতর। সামনে আসছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রিয় মাস রমজান। প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা পবিত্র রোজার সময়সূচি ২০২৩ এর সময় এবং পবিত্র রমজানের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করব। তো চলুন দেরি না করে জেনে নেই পবিত্র রমজান মাসের অর্থ এবং রোজার সময়সূচি ২০২৩ এবং রোজার ক্যালেন্ডার ২০২৩ এবং ২০২৩ সালের রমজান কত তারিখ সেই সম্পর্কে। এই ক্যালেন্ডারটি থেকে আপনি প্রতিদিনের সেহরির শেষ সময় এবং ইফতারের সময় সম্পর্কে জানতে পারবেন।

রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৩
রমজান ২০২৩

রমজান ২০২২ এর আনুমানিক তারিখ

একজন ব্যক্তির বেঁচে থাকার গড় আয়ু মিনিটে মিনিটে সংক্ষিপ্ত হয়, যেমন একটি ঘড়ির কাঁটার টিকটিক। এই ছোট্ট জীবনে সময় কিভাবে কেটে যায় তা কল্পনাতীত। আর মাত্র কয়েক মাস পরেই পবিত্র রমজান মাস আসছে । ২০২২  সালের রমজানের তারিখ অনুসারে, পবিত্র রমজান মাস ২০২৩ সালের ২২ এপ্রিলে হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে চাঁদ দেখার উপর রমজান এর সময়সূচি নির্ভর করে। এই পবিত্র রমজান মাসের হক যাতে আমরা আদায় করতে পারি সেজন্য আমাদের সবাইকে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।

রোজা কি?

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রোজা হচ্ছে একটি। সাওম আরবি শব্দ। এর ফার্সি প্রতিশব্দ হলো রোজা। ইসলাম ধর্মে রমজান একটি পবিত্র মাস, যার অর্থ খাদ্য, পানীয় এবং অন্যান্য আনন্দ থেকে বিরত থাকা। সাওম শব্দের অর্থ হল রোজা রাখা রমজান ইসলাম ধর্মে একটি পবিত্র মাস, যার অর্থ খাদ্য, পানীয় এবং অন্যান্য আনন্দ থেকে বিরত থাকা। ইসলামী ঐতিহ্যে, রোজা হল আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য খাদ্য ও পানীয় পরিহার করা। প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ সকলের জন্য এক মাস রমজান ফরজ। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রোজার শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।

রোজার নৈতিক শিক্ষা

রোজা শুধু আমাদের জন্য নয়। পক্ষান্তরে, বরং পূর্বের সকল নবী ও রাসুলের উম্মতের উপর ফরজ ছিল। এভাবে রোজার আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ সাধিত হয়। রোজার মাধ্যমে মানুষের ভেতর তাকওয়া (আল্লাহ ভীতি) অর্জন ও আল্লাহর প্রতি ভালবাসার সৃষ্টি হয়। ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত মানুষ ভালোবাসার সাথে কিছুই খায় না, আল্লাহকে ভয় করে এবং ইন্দ্রিয় তৃপ্তি লাভ করে না। মহান আল্লাহ বলেন- 

"তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে। যেমন করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো" (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-১৮৩)। 

আমরা তাকওয়া অর্জনের জন্য রমজান মাসে রোজা পালন করবো।

মানুষ লোভ, কামনা, বিদ্বেষ, আকাঙ্ক্ষায় আত্মনিয়োগ করে, অনেক খারাপ কাজ করে। রোজা মানুষকে এসব কাজ থেকে মুক্ত হতে শেখায়। রোজা একজন ব্যক্তি এবং তার অন্যায়ের মধ্যে একটি ঢাল। রোজা সম্পর্কে মহানবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- “সাওম (রোজা) ঢাল স্বরূপ” (বুখারী ও মুসলিম)। সর্বোপরি সিয়াম সাধনার মাধ্যমে শারীরিক, আধ্যাত্মিক ও আধ্যাত্মিক শান্তি পাওয়া যায়।

রোজার সামাজিক শিক্ষা

রোজার ফলে সমাজের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সহানুভূতি ও সহমর্মিতা তৈরি হয়। রোজা রাখার ফলে একজন মানুষ ক্ষুধার্ত ব্যক্তির অনুভূতি সহজেই বুঝতে পারে। সে উপলব্ধি করতে পারে ক্ষুধা ও তৃষ্ণা কতটা বেদনাদায়ক। এতে অসহায় মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও সহানুভূতির অনুভূতি জাগ্রত হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- 

“এ মাস সহানুভূতির মাস”(ইবনে খুযায়মা)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যদেরকে যেভাবে সদকা করতে উৎসাহিত করতেন তিনি নিজেও তেমনিভা‌বে খুব দান করতেন।হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) বলেন, 

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের মধ্যে অধিক দানশীল ছিলেন। বিশেষ করে রমজান এলে তার দানশীলতা আরো বেড়ে যেত” (বুখারী ও মুসলিম)।

 অতএব রোজা বা সাওম অসহায় ও দরিদ্রকে দান করতে উদ্বুদ্ধ করে।

রোজার ধর্মীয় গুরুত্ব

ধর্মের দিক থেকে রোজা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ সব ভালো কাজের প্রতিদান ১০ থেকে ৭০০ গুণ বাড়িয়ে দেন।  এ সম্পর্কে মহানবী হযরত ম‌েহোম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- 

“যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও সওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজা রাখে, আল্লাহ তায়ালা তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন”।

এটি একটি অপরিহার্য কাজ। যে কেউ এটা অস্বীকার করে সে কাফের হয়ে যাবে।

রোজার সামাজিক গুরুত্ব

যারা রোজা রাখেন তারা অযৌক্তিক অশ্লীল কথা বলা এড়িয়ে যান। হিংসা থেকে দূরে থাকে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এবং অন্যান্য অন্যায় আচরণ একজন রোজাদার দ্বারা কখনোই করতে পারে না। ফলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। ভ্রাতৃত্ব মানুষের মধ্যে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে ও বিশ্বাস স্থাপন হয়।

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া বাংলা

রোজার নিয়ত

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

বাংলায় নিয়ত : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

ইফতারের দোয়া

ইফতারের কিছুক্ষণ পূর্বে ‘ইয়া ওয়াসিয়াল মাগফিরাতি, ইগফিরলী’ এ দোয়াটি বেশী বেশী পড়তে হবে। অর্থঃ হে মহান ক্ষমা দানকারী! আমাকে ক্ষমা করুন। (শু‘আবুল ঈমান: ৩/৪০৭)

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

বাংলা অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক্বের মাধ্যমে ইফতার করছি।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসংখ্য হাদিসে যথাসময় ইফতার করার জন্য বিশেষভাবে তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'মানুষ যতদিন ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে ইফতার করবে; ততদিন তারা কল্যাণ লাভ করবে।

মহান আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাই কে সাহরির পর নিয়ত করা, ইফতারের সময় দোয়া পড়া এবং ইফতারের পর শোকরিয়া আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Getting Info...

About the Author

Visit My Website SisirBindu

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন